সুব্রত আপন
নানা জল্পনা কল্পনার অবসান হয়ে পুণরায় চালু হলো মহেশখালী পৌরসভাধীন জলদাশপাড়া জগন্নাথ শিশু নিকেতন। শিক্ষা দীক্ষায় অনগ্রসর এ গ্রামে বিদ্যালয়টি ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মাত্র ১০/১২ ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে। প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষা ক্রমাগত বাড়তে থাকতে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা। টানা দেড় যুগের বেশী সময় বিদ্যালয়টি চালু থাকার পরে নানা অব্যবস্থাপনা ও সামাজিক গোলযোগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বিদ্যালয়টি। দীর্ঘ ০৪ বছর পর কিরণ দাশকে সভাপতি, মিন্টু দাশকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি করে বিদ্যালয়টি চালু করলো সচেতন মহল।
বিদ্যা নিকেতনের সাবেক সভাপতি ঝুলন কুমার দাশ জানান, বিদ্যালয়টি অনেক কষ্টে ব্যক্তিগত ফান্ড ও উপজেলা পরিষদের সার্বিক সহযোগিতা এবং সমাজের স্থানীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শুরু চালিয়েছিলাম। দাড় করিয়েছিলাম এক চমৎকার পাঠদানের পরিবেশ। পাড়ার শিক্ষিত ছেলেরা নিজ উদ্যেগে শিক্ষকতা করে অনেকদিন পাঠদান উপযোগী করে রেখেছিল। বিদ্যালয় আঙ্গনায় রেখেছিলাম ছোট খেলার জায়গা, নিকেতন আঙ্গিনায় করেছিলাম চমৎকার ফুলের বাগান। তৎকালীন শিক্ষা অফিসার, সমাজ কমিটির নির্মল চক্রবর্তী, উদ্ভব দাশ সহ বিদ্যালয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ভোধন করেন। পরে সামাজিক উৎশৃঙ্খলায় বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে পরিনত হয়ে উঠে জোয়া মদের আড্ডা খানা।
খবর নিয়ে জানা গেছে, জুন ২০২৫ইং সালে স্থানীয় যুবকরা নিজ উদ্যোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি করে স্থানীয়ভাবে অভিভাবকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের স্কুলমুখী করার চেষ্টা অব্যহত রাখে। ১লা আগষ্ট ২০২৫ইং পুণরায় ৪৩ জন শিক্ষার্থীদের চালু হলো জগন্নাথ শিশু নিকেতন। গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন বাবলা সেন। নিকেতনের সাবেক শিক্ষার্থী নিউটন, সজিব, শাকিব, বলেন, আমরা এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। প্রাক্-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পর্যন্ত এ নিকেতনে পড়ে শৈশবের গুরুত্বপূর্ণ সময় কেটেছিল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় নিকেতনের চেয়ার, টেবিল, ব্ল্যাকবোর্ড পচে গলে নষ্ট হয়ে যায়, দরজা জানাল ভেঙে পরিনত হয় ভুতুড়ে পরিবেশ। নিকতেনটি পুণরায় চালু হওয়ায় আমরা খুব খুশি।
পাড়ার সর্দার মাষ্টার মন্টু দাশ জানান, জলদাশপাড়ার বেশীর ভাগ লোক জেলে কাজের সাথে সম্পৃক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করায় এ গ্রামে ছেলে মেয়েরা শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে রয়েছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে স্থানীয় ছেলে মেয়েদের শিক্ষামুখী করার চেষ্টা পুণরায় চালু করে যুব সমাজ। বিদ্যালয়টি আগের মতো পাঠদান উপযোগী হয়ে উঠবে সে প্রত্যাশা রাখি।