সুব্রত আপন, মহেশখালী
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে ছাত্রদের উপরে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে শহীদ হওয়া শহীদের সম্মান ও স্মরণে যে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছিল সেটি পরবর্তীতে ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণীয় করে রাখার জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা উপজেলা এমন কী ইউনিয়ন পর্যায়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় মহেশখালী পৌরসভার প্রাণকেন্দ্র সাবেক মহেশখালী কে.জি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সামনে পূর্বে ছোট আকারে শহীদ মিনার নির্মিত হয়ে মাতৃভাষা দিবস, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দিবসের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। উক্ত জায়গায় উপজেলা পরিষদের ভবন হওয়ায় গত ২০২২ অর্থ বছরে জেলা পরিষদ কক্সবাজারের সহযোগিতায় বাবু দীঘির পাড়ে ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি। নির্মাণের অল্প সময়ের মধ্যেই তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মাত্র কয়েক বছরেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পতিত হয়েছে। শহীদ মিনারের সামনে ঢালাই না হওয়ায় পরিনত হয়েছে বড় বড় গর্তে। বর্ষা আসলেই গর্তগুলো পানিতে টইটুম্বুর হয়ে পরিনত হয় ডোবায়। শহীদ মিটারটি নির্মাণের এতো দিনেরও করা হয়নি লাইটের ব্যবস্থা। ফলে চারদিকে মল-মূত্র, আবর্জনা ও আগাছায় ঢাকা ভুলে যাওয়ার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বছরের রাষ্ট্রীয় দিবসগুলো ছাড়া বাকি সময় কেউ খোঁজ রাখে না; শুধু বিশেষ দিবসগুলোতেও সামান্য পরিষ্কার করে আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়। বাকী সময় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ময়লা আবর্জনা, গাছের পাতা ও আগাছাই পরিপূর্ণ থাকে। শহীদ মিনারের যথাযথ মর্যাদা, পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য রক্ষার বিষয়টি হানি হচ্ছে বলে স্থানীয়দের ক্ষোভ। ১৫ নভেম্বর ২০২৫ শনিবার স্থানীয় দৈনিক কক্সবাজার বার্তায় নিউজ হলেও টনক নড়েনি উপজেলা প্রশাসনের।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, “এত টাকা ব্যয়ে শহীদ মিনার হয়েছে, কিন্তু পরে কেউ দেখভালই করে না। বছরের দুই দিন ছাড়া এখানে কেউ আসে না।” তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন, যাতে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভটি পরিচ্ছন্ন থাকে এবং লাইটের ব্যবস্থা করা হয়। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার জায়গা এমনভাবে নষ্ট হতে দেখা বেদনাদায়ক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হেদায়েত উল্যাহ জানান, শহীদ মিনারের চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং আশপাশের মাঠ ভরাট করে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলছে।