সুব্রত আপন
মহেশখালীতে দুটি দেশীয় একনলা বন্দুকসহ দুইজন বয়োবৃদ্ধ নারী সহ তিনজনকে আটক করে মহেশখালী থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জেলা পুলিশের পাঠানো সংবাদ ভিত্তিতে সন্ধ্যা ৭টার দিকে পৌরসভার গোরকঘাটা জেটি ঘাট এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হকের নেতৃত্বে বিশেষ পুলিশ দল অভিযানে নামে। ধৃত ব্যক্তিদের সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে তাদের তল্লাশি চালানো হলে অস্ত্র উদ্ধারগুলো উদ্ধার হয়।
গ্রেফতারকৃত তিনজন কক্সবাজারের পাহাড়তলী এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৫), একই এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল হাকিমের স্ত্রী গোলবাহার বেগম (৬৫) এবং কক্সবাজার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের মৃত সুলতান আহমেদের স্ত্রী দিলবার বেগম (৬০)। আটককৃতদের থানায় নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মহেশখালী থানার ওসি মঞ্জুরুল হক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে যে, এসব অস্ত্র হোয়ানক ইউনিয়ন থেকে সংগ্রহ করে কক্সবাজার শহরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। নৌপথকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করে তারা অস্ত্র পাচারের পরিকল্পনা করেছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরপরই পুলিশ সাড়াশি অভিযান চালায় এবং তাদের কাছ থেকে দুটি দেশীয় একনলা বন্দুক উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। অভিযানের সময় সন্দেহজনক আচরণ তাদের চিহ্নিত করতে সহায়তা করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অভিযানের পর পুলিশ জানায়, অস্ত্র পাচারকারীরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রুট ব্যবহার করে অপরাধীচক্রের কাছে অস্ত্র পৌঁছে দিচ্ছে। এবারও তারা নৌপথকে বেছে নিয়েছিল। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে সফল হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযানের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তা জানান, এই অভিযানে জড়িত চক্রের অন্যান্যদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশের মতে, স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত অস্ত্রগুলো প্রভাবশালী অপরাধীদের কাছে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ ধরনের অস্ত্র সাধারণত টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে সক্রিয় সন্ত্রাসীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আনা হয়। সেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছে এবং অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা একটি বড় সমস্যায় রূপ নিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অস্ত্র পাচার রোধে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হলেও এর মূলোৎপাটন সম্ভব হচ্ছে না। তবে পুলিশের সাম্প্রতিক এই সফল অভিযানে সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে এবং অপরাধ দমনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।