জুলাই ঘোষণা ও জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণাকে ইতিমধ্যে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। এর মধ্য দিয়ে দলটি নির্বাচনী সড়কে ওঠার আনুষ্ঠানিক বার্তাও দিয়েছে। তবে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ইসলামী আন্দোলন জুলাই ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণাসংক্রান্ত কিছু বিষয়ে মনঃক্ষুণ্নতা প্রকাশ করেছে। তবে এই দল তিনটি নির্বাচনের ঘোষিত সময় নিয়ে আপত্তি করেনি।
৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠা এই তিনটি দল অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরিতে জোর দিয়েছে। এর বাইরে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর বেশির ভাগই নির্বাচনের সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার মধ্য দিয়ে কার্যত রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করল। এখন সবার দৃষ্টি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোটের তফসিল ঘোষণার দিকে।
জুলাই ঘোষণাপত্রে মনঃক্ষুণ্ন হওয়া দলগুলোর দৃষ্টি এখন জুলাই জাতীয় সনদের দিকে। জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ আরও একাধিক দলের নেতারা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হয়, সেটিই থাকবে তাঁদের লক্ষ্য। এ জন্য জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও এর বাস্তবায়নে তাঁরা সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি করবেন এবং মাঠে কর্মসূচি দেবেন।
গতকাল জামায়াতে ইসলামীর সংবাদ সম্মেলনে দলটির নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার ক্ষেত্রে জামায়াতের কোনো আপত্তি নেই। তবে তার আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং নির্বাচনের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, নির্বাচনের উপযুক্ত যে পরিবেশ থাকার কথা ছিল, তা সরকার এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত টাইমলাইন অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের কার্যকারিতার ভিত্তিতে সামনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে বলে দাবি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে সরকার যে সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে চায়, তাতে এনসিপির আপত্তির কোনো জায়গা নেই। কিন্তু নির্বাচনের আগেই সরকারকে মাঠপ্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি ও নিশ্চয়তা দিতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরি করতে হবে এবং ওই সনদের ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।’