সোমা মুৎসুদ্দী
প্রকৃতিতে বর্ষার মায়াময়তা সোমা মুৎসুদ্দী প্রকৃতিতে এসেছে বর্ষা।সারাদিন বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ শুনতে কার না ভালো লাগে। বর্ষাকে নিয়ে কত কবি ছড়াকারই তো তাদের কবিতা, ছড়ায় গল্পে বর্ষাকে তুলে এনেছেন অপার সৌন্দর্য ও নানা বিচিত্রতায়। টিনের চালের বৃষ্টি ফোটা ও মাঠ, ঘাট পুকুর, ডোবা, নদী, শহর নগর প্রাম পেরিয়ে বৃষ্টি যেনো কবির ভাষায় জানান দেয়, গগনে গরজে মেঘ ঘন বরষা।বর্ষাকালে নদী ও পুকুর কানায়, কানায় ভরে ওঠে। উঠোনে পানি জমে, সেই পানিতে ছোট, ছোট ছেলেমেয়েদের দাপাদাপি দেখতে বেশ ভালো লাগে।কখনো উজান টানে কই, শিং বাড়ির উঠোনে এসে পড়ে।গাছপালা নতুন বৃষ্টির পানিতে চিরসবুজ ও সজীব হয়ে ওঠে।দূরের পাহাড়, বন বনানী যেনো অপার সৌন্দর্য বিলিয় দেয় প্রকৃতিতে। এমন দিনে কদম, কেয়া ফুল ফোটে। কবি বর্ষাকে প্রেয়সীর সাথেও তুলনা করেন নানা উপমা ও ছন্দে।কখনো জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি ছোঁয়া কখনো বারান্দায় দাঁড়িয়ে এক কাপ গরম চায়ের সাথে বৃষ্টি উপভোগ করার মজাই আলাদা।কখনো শহরের রাস্তায় ছাতা মাথায় হেঁটে চলা আর বৃষ্টির সাথে যেনো নিরবে কথা বলা। বৃষ্টির দিনে অনেকে খিচুড়ি খেতে পছন্দ করেন, আচার, গরুর মাংশ বা আলুর দমের সাথে।কখনো বা কোনও কাঁচঘেরা কফিহাউসে বসে কফি পান করতে, করতে বৃষ্টির মোহনীয় দৃশ্য উপভোগ করা। অনেকে বেড়ানোর জন্য বর্ষাকাল ও পাহাড়কেই বেছে নেয়।পাহাড়ের কাছাকাছি কোনও কটেজের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বর্ষার রূপ উপভোগ করার মজাই আলাদা। গ্রামে মহিলারা মাটির বারান্দায় বসে নকশিকাঁথায় ফুল তোলেন, কেউবা চটের দড়ি, ব্যাগ, মোড়া ইত্যাদি তৈরি করেন।কোনও কোনও সময় রাস্তায় পানি জমে, গ্রাম ও পাহাড়ি ছড়াগুলো বর্ষায় প্লাবিত হয়। অনেকে তার প্রেয়সীকে ভেবে কবিতা লিখেন বর্ষামুখর সন্ধ্যায়। তাছাড়া গ্রামে বিদ্যুৎ চলে গেলে মোমবাতি বা হারিকেনের টিমটিমে আলোয় দাদীর গলা জড়িয়ে ধরে গল্প। শোনার মজাই আলাদা। বর্ষা বিকেলে, গরম, গরম পাপড় ভাজা চা ও ঝালমুড়ি খেতে অনেকেই পছন্দ করেন।বর্ষার চিরায়তরূপ যেনো প্রকৃতির ঐতিহ্য। তাইতো প্রকৃতি বর্ষাকে মায়াময় ও অপরূপ করে বিলিয়ে দিয়েছেন প্রকৃতিতে। বর্ষা দিনে স্কুল ছুটির পর মাথায় বড় কচুর পাতা দিয়ে বাড়িফেরার সেই স্মৃতিগুলো অনেক মিস করি। গ্রাম, শহর ও নগরে বর্ষা আসুক চির শান্তির পরশ নিয়ে।